বিদেশ যাওয়া হলো না আব্দুল্লাহর

চার বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে হয় আব্দুল্লাহ ও হায়াতি আক্তার দম্পত্তির। বিয়ের পর সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। এরই মধ্যে তাদের সংসারে আসে একটি ছেলে সন্তান। নাম রাখা হয় ওমর ভূঁইয়া।

কয়েক দিন পর বেকারত্বের ইতি টানতে বিদেশ যাওয়ার কথা ছিল আব্দুল্লাহর। স্বপ্ন ছিল পরিবারের হাল ধরবে। ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ বানাবে। কিন্তু একটি দুর্ঘটনায় সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল আব্দুল্লাহর।
স্ত্রী হায়াতি আক্তারের চোখে মুখে দুঃস্বপ্নের ছাপ। স্বামীকে হারিয়ে বার বার অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন তিনি। বাবার লাশের দিকে তাকিয়ে আছে ছোট্ট ওমর। ওমর এখনও জানে না তার বাবা আর বেঁচে নেই।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার জাফরগঞ্জ গঙ্গামন্ডল রাজ ইন্সটিটিউটের সামনে  ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে মোটরসাইকেলের চালক আব্দুল্লাহ  দুর্ঘটনায় মারা যায়। তিনি বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন বুড়িচং উপজেলার রামপুর খালার বাড়ি যাবেন। সেখানে গিয়ে খালার সঙ্গে দেখাও করে এসেছেন। কিন্তু বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে আব্দুল্লাহর মরদেহ গ্রামের আসার পর পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে।

বড় ছেলেকে হারিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন আব্দুল্লাহর মা বাবা, আত্মীয় স্বজন। নিহত আব্দুল্লাহ (২২) দেবিদ্বার উপজেলার শাকতলা ভূঁইয়া বাড়ির আব্দুল আওয়াল ভূঁইয়ার বড় ছেলে।

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোটরসাইকেলটি দেবিদ্বারে আসার পথে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রাক চাপা দিলে মোটরসাইকেলের চালক চাকায় পিষ্ট হয়ে যায়। মোটরসাইকেলের পেছনে বসা একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (কুমেক) পাঠানো হয়েছে। পরে স্থানীয়রা ট্রাকটি আটক করে পুলিশে খবর দেয়। মিরপুর ফাঁড়ি হাইওয়ে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে। 

নিহত আব্দুল্লাহর স্ত্রী হায়াতী আক্তার বলেন, চার বছর আগে ভালোবেসে হয় বিয়ে হয় আমাদের। ওমর ভূঁইয়া নামে আমাদের একটি ৪ বছরের ছেলে সন্তান আছে। আমাদের এখন কী হবে বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

এ ব্যাপারে মিরপুর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পারভেজ আলী বলেন, দুর্ঘটনার পর আমরা ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছি এবং ঘাতক ট্রাকটি আটক করি। মেডিক্যাল রিপোর্টের জন্য মরদেহটি দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। আমরা ঘাতক ট্রাকের বিরুদ্ধে মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।