শোকার্ত ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি শিশুকে শেষ বিদায় জানাচ্ছে। ছবিটি ১৯ এপ্রিল গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতাল থেকে তোলা। ছবি : এএফপি
ইসরায়েলের বিমান হামলায় গাজা উপত্যকাজুড়ে রবিবার ভোর থেকে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরায়েল ১৮ মার্চ থেকে গাজায় পুনরায় বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করে, যা প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর পুনরায় সংঘাতের সূচনা করে। ওই যুদ্ধবিরতি ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের মধ্যে একটি বিরতি এনে দিয়েছিল।
সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল এদিন বলেন, ‘আজ ভোর থেকে দখলদার বাহিনীর বিমান হামলায় গাজা উপত্যকাজুড়ে ২০ জন নিহত হয়েছে এবং বহু নারী, শিশুসহ বহু মানুষ আহত হয়েছে।’
পরে দেওয়া এক পৃথক বিবৃতিতে সংস্থাটি আরো জানায়, রাফার পূর্বাঞ্চলে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর একটি ড্রোন হামলায় আরো পাঁচজন নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবার বলেছেন, তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন এবং গাজায় আটক অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্ত করে ঘরে ফিরিয়ে আনবেন, তবে এর বিনিময়ে হামাসের দাবির কাছে ইসরায়েল নতিস্বীকার করবে না।
হামাসের যুদ্ধ সমাপ্তি ও সেনা প্রত্যাহারের আহ্বানে ইসরায়েল সাড়া দেবে না উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আছি।
এই মুহূর্তে আমাদের ধৈর্য ও দৃঢ়তার প্রয়োজন—জয় লাভের জন্য।’
হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত মাসে ইসরায়েল আবারও হামলা শুরুর পর থেকে গাজায় অন্তত এক হাজার ৮২৭ জন নিহত হয়েছে। এই নিয়ে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মোট মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছেছে ৫১ হাজার ২০১ জনে, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক মানুষ বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘও এই পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচনা করে।
এই যুদ্ধ শুরু হয় ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর। ইসরায়েলি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই হামলায় এক হাজার ২১৮ জন নিহত হয়। পাশাপাশি ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়, যাদের মধ্যে এখনো ৫৮ জন গাজায় রয়েছে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, তাদের মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছে।