গাজায় চলমান আগ্রাসনের কারণে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগেও মামলা চলছে।
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫১ হাজার ৩০৫ ছাড়াল
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত আরও ৪৫ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। গতকাল বুধবার রাতভর চলা এই হামলায় মৃতের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গতকাল গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসা কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে, বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৫১ হাজার ৩০৫ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, আহত অবস্থায় গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ১০৫ জনকে। এ পর্যন্ত আহতের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জনে। বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন কিংবা রাস্তায় পড়ে আছেন, যাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না উদ্ধারকর্মীরা।
প্রায় ১৫ মাসের সামরিক অভিযান এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এরপর প্রায় দুই মাস পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও, হামাসের সঙ্গে সেনা প্রত্যাহার সংক্রান্ত মতানৈক্যের জেরে মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ফের বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
১৮ মার্চ শুরু হওয়া এই নতুন দফার অভিযানে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৯২৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ইসরায়েলের এই বর্বর হামলার মাধ্যমে চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ হয়েছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং অঞ্চলটির প্রায় ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।